ঈদের আগের দিন সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেছেন, উদযাপনের এই উপলক্ষ যেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ না হয়ে ওঠে।
শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন না। অনেকের কোনো বাহ্যিক লক্ষণ না থাকায় আপনি বুঝতে পারবেন না আপনার পাশের ব্যক্তিটিই করোনাভাইরাস বহন করছে।
“এর ফলে আপনি যেমন করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন, তেমনি আপনার নিকটাত্মীয় বা পাড়াপ্রতিবেশীকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মনে রাখবেন, সবার উপরে মানুষের জীবন। বেঁচে থাকলে আসছে বছর আবার আমরা আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারব।”
করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে এক মাস রোজা শেষে আরেকটি বিবর্ণ ঈদের সামনে বাংলাদেশ। মহামারীর বিধিনিষেধের মধ্যেই শুক্রবার দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন হতে যাচ্ছে।
গতবছরের মত এবারও রোজার ঈদ এসেছে লকডাউনের বিধিনিষেধের মধ্যে। ঈদগাহ বা খোলা জায়গার বদলে মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং কাতারে দূরত্ব রেখে ঈদ জামাতের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাস অতি ছোঁয়াচে বলে হাত মেলানো বা কোলাকুলিতেও মানা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ব এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ নামের এক মারণব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
“দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ভাইরাস একদিকে যেমন অগণিত মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিসাধন করছে মানুষের জীবন-জীবিকার। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই ভাইরাস।”
সরকারপ্রধান বলেন, গত বছরের শেষ দিকে যখন বিশ্বব্যাপী ভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা কমতে শুরু করেছিল, তখন এই সঙ্কট থেকে মুক্তির আশা জাগতে শুরু করেছিল। কিন্তু এ বছরের মার্চ থেকে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ সব পরিকল্পনা ও প্রত্যাশাকে ‘নস্যাৎ করে’ দিয়েছে। ‘কষ্ট হবে জেনেও’ সরকার মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে।
“এমনি এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে এবারও আমাদের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হচ্ছে। আমরা ঈদ উদযাপন করব, তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কোনোভাবেই এই ঈদ উদযাপন যাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির উপলক্ষ হয়ে না ওঠে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।”
যে যেখানে আছেন, সেখান থেকেই ঈদ আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এই দুঃসময়ে দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আপনার সাহায্য হয়ত একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে।”
Leave a Reply