আজ ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০নভেম্বর গনতন্ত্রের পুনঃউদ্ধারের স্মরণীয়দিন বাস্তব রণক্ষেত্রে সুজন।

চট্টগ্রাম রিপোর্টার : মোহাম্মদ মাসুদ

আজ ১০ নভেম্বর, শহীদ নূর হোসেন দিবস।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৮৭ সালের এই দিনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন নূর হোসেন।

আজকের এই ঐতিহাসিক দিনের স্বরণে বরেণ্য রাজনৈতিকবিদ সহ-সভাপতি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সাবেক প্রশাসক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন খোরশেদ আলম সুজন তার নিজস্ব ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন ।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় ঐক্যজোটের মিছিলে চট্টগ্রাম থেকে ছাত্রনেতারা যোগ দিয়েছিলেন। নূর হোসেন বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই জ্বলন্ত স্লোগানে মিছিলে উপস্থিত হন। সে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ীর সাথে সাথে হাঁটছিল, নূর হোসেনের কাছাকাছি দূরত্বে ছিলাম আমি খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি আরো বলেন-মিছিলটি যখন জিরো পয়েন্টে পৌঁছে তখন স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে মিছিল লক্ষ্য করে প্রথমে বোমা নিক্ষেপ করা হয়, এর পরই গুলি করা হয়, সেই গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন নূর হোসেন। আমরা যে কেউ সেদিন শহীদ হয়ে যেতাম। বোমা ও গুলির পর আমাদের মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আমরা আরো বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী যুবকের মৃত্যুর খবর পাই। শহীদ নূর হোসেনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে। দেশে কায়েম হয় দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র।

আজকের এই দিনে শহীদ নূর হোসেন এর প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী।

উল্লেখ্য,শহীদ নূর হোসেন দিবস বাংলাদেশের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৮৭ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে প্রতি বছর ১০ নভেম্বর দিনটি পালন করা হয়। নূর হোসেন পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন।

আন্দোলনের সময় তিনি বুকে “স্বৈরাচার নিপাত যাক” এবং পিঠে “গণতন্ত্র মুক্তি পাক” স্লোগান লিখে মিছিলে যোগ দেন এবং একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নূর হোসেন নিহত হওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখে। দিনটিকে প্রথমে “ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর” হিসেবে পালন করা হলেও, আওয়ামীলীগ দিনটিকে “নূর হোসেন দিবস” হিসেবে পালন করতে শুরু করে।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয়ের সামনে ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দলের অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করে।

স্বৈরশাসকের সব বাধা উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল, সাহসী যুবক উদাম গায়ে লিখেছিলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক’।

সমাবেশ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরই মধ্যে খবর আসে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হন অনেকে। নূর হোসেনের আত্মদানের মধ্যে দিয়ে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে শহীদ নূর হোসেন দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে পালনে আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র : বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর