চট্টগ্রাম রিপোর্টার: মোহাম্মদ মাসুদ
বিশ্ব শ্রেষ্ঠমানব ইসলাম প্রিয় মুসলিম জাহানের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয় প্রাত্যহিক ভূবনে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তো হোক পূর্ণ আমলে কর্রময় ও চীরস্মরণীয়।১২ রবিউল আউয়াল প্রিয় নবীর রস্মরণে অদ্বীতৃয় অনন্য ঐতিহাসিক চীরস্মরণীয় দিন ও মাস।
আজ ১৪৪৩ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল হচ্ছে ২০ অক্টোবর (বুধবার)। দিনটি যথাযথযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী উদযাপন করা হবে। কেউ কেউ মাসব্যাপী প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম, বেড়ে ওঠা, নবুয়ত, হিজরত, রাষ্ট্রগঠন, ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক জীবন, আন্তর্জাতিক জীবন, সমাজ সংস্কারসহ জন্ম থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন দিক ও বিষয় নিয়ে সীরাতুন্নবি ও উসওয়াতুন্নবী শিরোনামে অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন। এছাড়া কেউ কেউ মাজিউন্নবী আবার কেউ কেউ ৬৩দিন ব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী শীর্ষক আলোচনা সভাও অব্যাহ রাখে। যা রবিউল আউয়াল মাসেই উদযাপন করা হয়।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয় প্রাত্যহিক ভূবনে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তো হোক পূর্ণ আমলে কর্রময় ও চীরস্মরণীয়।প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ফিরে যাওয়ার মাস। প্রতি বছর এ মাসে মুসলিম উম্মাহ ক্ষণিকের জন্য হলেও ফিরে যায়। কারণ মাসটি যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। বিশ্বনবির শুভাগমন ও বিদায়ে উপলক্ষ্যে বিশ্বমানবতার শুধু আনন্দ-উৎসবের মাস নয় ।
রবিউল আউয়াল মাস। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ফিরে যাওয়ার মাস। প্রতি বছর এ মাসে মুসলিম উম্মাহ ক্ষণিকের জন্য হলেও ফিরে যায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোয়। কারণ মাসটি যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস। বিশ্বনবির শুভাগমন উপলক্ষ্যে বিশ্বমানবতার আনন্দ-উৎসবের মাস।
প্রায় দেড় হাজার বছর আগে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র নগরী মক্কার বিখ্যাত বনু হাশিম বংশে রবিউল আউয়াল মাসের দ্বিতীয় সোমবার (ফীলের বছর) দিনের রাতের মহাসন্ধিক্ষণ ‘সুবহে সাদেক’-এ শুভ জন্মগ্রহণ করেন। আবার একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করলেও মুসলিম উম্মাহর কাছে এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পরিচিত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভ জন্মের দিন ও বছর নিয়ে হাদিসে পাকে আছে সুস্পষ্ট বক্তব্য। তিনি ইংরেজি পঞ্জিকার হিসেব মতে, ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ২০ অথবা ২২ এপ্রিল জন্ম গ্রহণ করেন।
বার ও জন্ম বৎসর নিয়ে হাদিসে সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকলেও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুনির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ কারণে পরবর্তী যুগের আলেম এবং ঐতিহাসিকগণ এ সম্পর্কে মতভেদ করেছেন।
প্রিয় নবির জন্ম সম্পর্কে মা আমিনার কথা
হজরত ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যখন তাঁর জন্ম হয়েছিল তখন আমার শরীর থেকে এক জ্যোতি বের হয়েছিল; যাতে শামদেশের অট্টালিকাসমূহ আলোকিত হয়েছিল। ইমাম আহমাদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ইরবায বিন সারিয়া কর্তৃক অনুরূপ একটি বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। (মুখতাসারুস সিরাহ)
বুওয়তের পূর্বাভাসে জগৎ আলো করে প্রিয় নবির শুভাগমনে কিছু অবিশ্বাস্য উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটেছিল। যা ছিল অবাক ও বিষাময়কর।
-বাহিরা পাদ্রীদের সরগম গীর্জাগুলো নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ইমাম বায়হাকি, তাবারি ও অন্যান্যরা তা উল্লেখ করেন।
সর্বোপরি উপমহাদেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান রবিউল আউয়াল মাস এবং ১২ তারিখকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মমাস ও দিন হিসেবে জানে এবং সর্বাধিক সনদে রচিত রাসুলের জীবনীগ্রন্থ প্রণেতা ইবনে ইসহাক রবিউল আউয়াল মাস এবং ১২ তারিখকে ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন, সে হিসেবে এ উপমহাদেশের অধিকাংশ মুমিন মুসলমান ১২ রবিউল আউয়ালকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ হিসেবে জানেন।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ও মাস নিয়ে মতভেদ থাকলেও তিনি সোমবার সুবহে সাদেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন এটি চিরন্তন সত্য। এ ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও বিশ্লেষকদের মতে তিনি রবিউল আউয়াল মাসে জন্ম গ্রহণ করেছেন মর্মে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
ঈদে মিলাদুন্নবীর মাস, তারিখ নিয়ে যতই মতভেদ থাকুক না কেন; প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত পুরো জীবন হোক মুসলিম উম্মাহর জন্য আদর্শ।
আল্লাহ তাআলা বিশ্ব মানবতার সব ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার জন্য প্রিয় নবির আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর পুরোপুরি অনুসরণ, অনুকরণ এবং বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধ বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে রহমত দিয়ে ঢেকে দিন। আমিন।
সের একটি দিন প্রিয় নবির জন্ম উৎসবে আনন্দ নয় বরং মাসজুড়ে প্রিয় নবির আদর্শে নিজেদের রঙিন করে বছরজুড়ে সুন্নাতের আলোকে জীবন পরিচালনার উৎস হোক পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উযযাপন।
Leave a Reply