আজ ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আলোচিত নায়িকা পরিমনির সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণে এডিসি সাকলাইনকে ডিবির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি।

চট্টগ্রাম কণ্ঠ : ডেক্স

গ্রেপ্তারকৃত আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের এডিসি গোলাম সাকলায়েনকে তার ডিবির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও তাদের অনৈতিক মেলামেশার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে)

শনিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রধান) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। যেহেতু একটি অভিযোগ এসেছে, তাকে আমরা আর ডিবিতে রাখছি না। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর একটি তদন্ত করবে। তদন্তের পর তার বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে কি না, এটা পরের বিষয়।

এদিকে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পরীমনির সঙ্গে সাকলায়েনের যে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এসেছে, তদন্ত করে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, গোলাম সাকলায়েনকে গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে প্রাথমিকভাবে সরিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হবে। এরপর একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। ওই তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র আরও জানায়, পরীমনির সঙ্গে ডিবি এডিসি গোলাম সাকলায়েনের এমন সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে সমালোচনার ঝড়।

এ বিষয় নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে।

গোলাম সাকলাইন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার। রাজারবাগ অফিসার্স কলোনীর মধুমতি ভবনের ৯/সি নম্বরে রয়েছে তার সরকারি ফ্ল্যাট।

সম্প্রতি বোটক্লাবের ঘটনায় নাসির ইউ আহমেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইনের সঙ্গে তার বাসায় পরীমনির ১৮ ঘন্টা অবস্থান নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরীমনিকে বিয়ে করা, গাড়িতে ঘুরে বেড়ানোসহ ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি উঠে আসে।

পরীমনির তার বাসায় দীর্ঘ সময় অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও সরকারের গোয়েন্দা দপ্তরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একাত্তর টিভিতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পরীমনির গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় প্রবেশে করছেন। 

প্রতিবেদন প্রকাশের দুদিন পরও সেই কর্মকর্তাকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এ নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দায়ের করা মামলার বাদীকে এভাবে বাসায় নিয়ে যাওয়া বা সম্পর্ক স্থাপন নীতি-নৈতিকতা বর্জিত এবং পেশাদারিত্বমূলক কাজ নয় বলে মনে করেন পুলিশের সাবেক কর্মকর্তারাও। 

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ১ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে পরীমনির সাদা রংয়ের হ্যারিয়ার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫ ৯৬ ৫৩) প্রবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি আবাসিক ভবনের সামনে। সেই গাড়ি থেকে লাল রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত আলোচিত সেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা নামেন। এরপর সাদা রংয়ের স্লিপিং গাউন পরিহিত অবস্থায় নামেন পরীমনি।

পুলিশ কর্মকর্তাদের বাসভবনের নিচে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে বাসার চাবি নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর দুজন লিফটে করে ওই কর্মকর্তার বাসায় যান। এরপর পরীমনির গাড়ি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগও ওই কর্মকর্তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত দেড়টায় ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির গাড়ি। পুলিশের সন্দেহ হলে পরীমনির চালকের কাছে তার পরিচয় জানতে চান। চালক তখন ওই নিরাপত্তা কর্মীকে বলেন, পরীমনির সাথে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিয়ে হয়েছে বলে তিনি জানেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর