চট্টগ্রাম রিপোর্টার: তুহিন
ঘরছাড়া স্ত্রীকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন নিজের বাসায়, কিন্তু মাঝপথে হঠাৎ বেঁকে বসেন স্ত্রী। না, তিনি স্বামীর ঘরে যাবেন না। পথেই শুরু হয় ঝগড়া। আগে থেকে ছুরি ছিল স্বামীর হাতে। সেটি নিয়েই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন স্ত্রীর ওপর। ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত স্ত্রীকে আশেপাশের লোকজন মিলে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই ডাক্তার জানালেন— সবকিছু আগেই শেষ!
ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়া ওই নারীর নাম রেহেনা বেগম (৩০)। আর স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮)। রেহেনার বাড়ি নোয়াখালী হলেও জাহাঙ্গীরের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মংলা থানার কেওড়াতলায়।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা জাহাঙ্গীরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
জানা গেছে, স্ত্রীসহ এক ছেলে ও এক মেয়েকে চট্টগ্রামে রেখে তিন বছর আগে দুবাইয়ে যান জাহাঙ্গীর হোসেন। এরপর থেকে হালিশহরের বউবাজারের আমতলে একটি ভাড়া বাসায় মেয়েসহ রেহেনা বেগম বসবাস করতে থাকেন। অন্যদিকে ছেলেকে দেন মাদ্রাসায়।
প্রায় তিন বছর পর মাসখানেক আগে জাহাঙ্গীর দুবাই থেকে ফিরলেও স্ত্রী-কন্যাকে আর পাননি। তার মাসছয়েক আগে বউবাজারের বাসা ছেড়ে স্ত্রী-কন্যা চলে গেছেন অন্যখানে।
স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও পরকীয়ার সম্পর্ক আছে— এমন সন্দেহ থাকলেও জাহাঙ্গীর বারেবারেই চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন স্ত্রীকে ঘরে ফেরানোর। সেই চেষ্টায় আপাত সফল হয়ে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাতে স্ত্রী রেহানাকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। তবে হালিশহরের নয়াবাজার বিশ্বরোড এলাকায় আসার পর রেহানা হঠাৎই বেঁকে বসেন। এ নিয়ে পথেই শুরু হয় ঝগড়া। শেষ পর্যন্ত জাহাঙ্গীরের পকেটে লুকানো ছুরির আঘাতে রেহানাকে ক্ষতবিক্ষত করে সেই ঝগড়ার বেদনাদায়ক সমাপ্তি ঘটে।
আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গুরুতর আহত রেহানাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম কন্ঠকে বলেন, ‘তাদের বনিবনা হচ্ছিল না। তবে স্ত্রীর আদৌ পরকীয়া ছিল কিনা সেটা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘাতক স্বামী প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে স্ত্রী রেহানাকে হত্যার পরিকল্পনা তার আগে থেকে ছিল।
Leave a Reply