আনোয়ারা রিপোর্টার: আলবিন
আনোয়ারা উপজেলায় মুজিবকিল্লা নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও শিডিউল মতে কাজ না করার এই অভিযোগ উঠে। ফলে নির্মাণ হতে না হতেই বেঁকে গেছে বেশিরভাগ গ্রেড বিম। ঢাকা থেকে আসা পরিদর্শণ টিমের কর্মকর্তারা এসব নিম্নমানের কাজ দেখে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বলে জানা গেছে। এসময় নিম্নমানের কাজের জন্য তারা ঠিকাদার এবং উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তাকে বকাঝকা করেছেন বলে জানা যায়। তবে নিম্নমানের কাজের বিষয়ে ঠিকাদার এবং প্রকল্প কর্মকর্তার যোগসাজসের গুঞ্জণ রয়েছে প্রকল্প এলাকায়।
জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের এক নং ও দুই নং ওয়ার্ডেপ্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুই নং ওয়ার্ডের মুজিব কিল্লাটির ঠিকাদার বাঁশখালী উপজেলার চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান। এই মুজিব কিল্লাটির নির্মাণ কাজের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বেশিরভাগ পিলার ঢালাইয়ের পর বেঁকে গেছে। এই অবস্থায়ও ঠিকাদার আর প্রকল্প কর্মকর্তা মিলে নির্মাণকাজ চালিয়ে নিতে চেষ্টা করে। কিন্তু এসব অনিয়মের মাঝখানে বাঁধ সাধে ঢাকা থেকে আসা পরিদর্শণ টিমের অনীহা। পরিদর্শণ টিমের পরিদর্শণের সময় ঠিকাদার বদরুদ্দীন চৌধুরী ও উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এসময় পরিদর্শণ টিমের কর্মকর্তারা জামিরুল ইসলামকে বলেন, আপনি এগুলো দেখেননাই। আপনার কোনো সম্বপৃক্ততা না থাকলে ঠিকাদার এভাবে নিম্নমানের কাজ কেমনে করতে পারে। এ ধরণের নিম্নমানের কাজ কোনো অবস্থাতেই সমর্থনযোগ্য নয়। এগুলো ভেঙ্গে আবার নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। আর যতদিন এটা ভেঙ্গে নির্মাণ করা হবেনা ততদিন ঠিকাদারের বিল বন্ধ থাকবে।
সরেজমিন পরিদর্শণে দেখা যায়, জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ডের মুজিব কিল্লার নির্মানাধীন গ্রেডবিমগুলোর কয়েকটি বাদে বাকী সবগুলো গ্রেডবিম দেবে গেছে। বিভিন্ন অংশে আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। তবে ঠিকাদারের লোকজন কয়েকটি ভেঙ্গে বাকী গুলো না ভেঙ্গে তার উপরেই কাজ চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে ঠিকাদার এবং প্রকল্প কর্মকর্তার যোগসাজশে এই অনিয়ম সংগঠিত হয়েছে। না হলে ওনার সামনে কীভাবে এভাবে নিম্নমানের কাজ করতে পারে। ঢাকার পরিদর্শণ টিমের লোকজনের প্রশ্নের মুখে ঠিকাদার এবং প্রকল্প কর্মকর্তা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
স্থানীয় লোকজন আরো জানান, এই মুজিব কিল্লার নির্মাণকাজ শুরুর আগেই স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির একাউন্টে ৩% ও একজন কর্মকর্তার একাউন্টে ৭% হারে কমিশন দিতে হয়েছে ঠিকাদারকে। এভাবে কমিশন দিয়ে কাজ করলে ঠিকাদার ভাল কাজ করবেন কীভাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসে থাকি, আনোয়ারার এক প্রান্তে কাজ চলছে। এখানে সারাক্ষণ বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি শুধু ঢালাই দেয়ার সময় যাই। এখানে নিম্নমানের কাজ করলে সেটার দায়ভার ঠিকাদারকে নিতে হবে। ঢাকা থেকে পরিদর্শণ টিম এসে বাঁকা গ্রেডবিম গুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করতে ঠিকাদারকে বলে দিয়েছেন। আমারও এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নাই।
ঠিকাদার বাঁশখালীর চেয়ারম্যান বদরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, যেসব পিলার বেঁকে গেছে সেখানে আগে থেকে মাটি ভরাট না করায় গ্রেডবিমগুলো বেঁকে গেছে। বেঁকে যাওয়া গ্রেডবিম গুলো ভেঙ্গে আমরা আবার নতুন করে নির্মাণ করছি।
Leave a Reply