আজ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টানেলে রেস খেলা সেই সাত গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম কন্ঠ : ডেক

কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে রেসের ঘটনায় সাত গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে টানেল কর্তৃপক্ষ। বুধবার টানেল কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী থানায় ওভারস্পিডসহ সড়ক পরিবহন আইনে এই মামলা দায়ের করে। এতে সাতটি গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে অজ্ঞাত চালকদের আসামি করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৫০) বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ অক্টোবর রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে চট্টমেট্রো–গ–১২–৯০৪৩, চট্টমেট্রো–ঘ–১১–৫৭০২, ঢাকামেট্রো–খ–১১–৮৯৩৫, ঢাকামেট্রো–খ–১২–১৮১৪, চট্টমেট্রো–গ–১৩–৩৫৭৩, চট্টমেট্রো–গ–১৪–২২৫৪, ঢাকামেট্রো–গ–৪৯–২৪৯১

গাড়ির অজ্ঞাতনামা চালকসহ উল্লেখিত গাড়ির সহযোগী এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ টি প্রাইভেট কারের চালকসহ তাদের সহযোগীরা টানেলের সম্মুখভাগে চায়না হারবাল ক্রসিং ও টানেলের ভেতর রেসলিং, ওভারটেকিং ও বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানোসহ যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

গাড়িগুলো পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে টানেলে প্রবেশ করে আনোয়ারা প্রান্তে টোল প্রদান করে। টোল প্লাজার সামনে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর পর আবারো টানেলে প্রবেশ করে এবং একইভাবে সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘন করে। টানেল কর্তৃপক্ষ ও রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান পরামর্শক্রমে মোটরযানের গতিসীমা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬০ কিঃ মিঃ নির্ধারণ করেন। টানেলের প্রবেশ মুখ, ভেতরসহ বিভিন্ন দৃশ্যমান স্থানে গতিসীমা সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬০ কিঃ মিঃ এর সাইনবোর্ড লাগানো হয়। কিন্তু উপরোক্ত গাড়িগুলোর চালক ও তাদের সহযোগিরা সর্বোচ্চ গতিসীমা লঙ্ঘন করে টানেলের বাইরে এবং ভেতরে রেসলিং, ওভারটেকিং ও বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালায়। পরবর্তীতে সিসিটিভি মনিটরিং কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরার ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে গাড়িগুলোর নম্বর শনাক্ত করে। ২/৩ টি গাড়ির নম্বর শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে বন্দর জোনের পুলিশ উপ–কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা বলেন, টানেল কর্তৃপক্ষ সাতটি গাড়ি শনাক্ত করে মামলার আবেদন করেছে। আমরা সেটি মামলা হিসেবে নিয়েছি। চালকদের গ্রেপ্তার করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন সকাল থেকে যান চলাচলের জন্য টানেলটি খুলে দেওয়া হয়। ওই দিন দিবাগত রাতে দামি স্পোর্টস কার নিয়ে রেসে মেতে ওঠে একদল উঠতি বয়সী ছেলে। অথচ টানেলে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এতে প্রায় ১০টি গাড়ি অংশ নেয়।

টানেলে রেস করা যুবকেরা ‘দ্য স্লো কিডস’ নামে একটি পেজে রেসের ভিডিওটি আপলোড দেয়। ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে হলিউড সিনেমা ‘দ্য ফাস্ট অ্যান্ড দ্য ফিউরিয়াস’র সঙ্গে তুলনা করা হয়।
টানেলের সহকারী প্রকৌশলী (টোল ও ট্রাফিক) তানভীর রিফা বলেন, টানেলের ভেতরে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু রেসে অংশ নেওয়া গাড়িগুলো এর চেয়ে বেশি গতিতে চলেছে। শুধু তা–ই নয়, গাড়িগুলো যেভাবে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছিল, তাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। আমরা বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি। অপরদিকে টানেলের ভেতরের স্পিড নিয়ে কর্তৃপক্ষ নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। টানেলের ভিতরে স্পিড নিয়ন্ত্রণে স্পিড ক্যামেরা স্থাপনসহ মনিটরিং এর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর