আজ ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিআরবি ডবল মার্ডার মামলার আসামি বাবরকে দেখেনি সাতক্ষীরা পিবিআই ও কোন সম্পৃক্ততা পায়নি।

চট্টগ্রাম কন্ঠ : ডেক্স

চট্টগ্রামর সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এলাকার বহুল আলোচিত ডাবল মার্ডার মামলা, চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। তবে এসব সাক্ষীরা খুনের ঘটনায় সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে ঘটনাস্থলে চোখেও দেখেননি বলে জানিয়েছেন আদালতকে।
বুধবার (৩১ আগস্ট) অতিরিক্ত মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিনের আদালতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
চারজন সাক্ষী হলেন মনির হোসেন, সুনীল ভৌমিক, মো. জাবেদ ও মো. শামীম। এরা আদালতে পিবিআইয়ের দাখিল করা অভিযোগপত্রে ২ থেকে ৫ নম্বর সাক্ষী।
চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জাতীয় সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা পত্রিকা প্রতিনিধিকে বলেন, ‘বুধবার থেকে সিআরবি ডাবল মার্ডারের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। শুরুতেই চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। তবে তারা কিছু জানাতে পারেনি। সাক্ষীরা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর তাদের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাই। তারা সেখানে দোকানদার থাকার কারণে তাদের সাক্ষী করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২৫ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপক্ষ চারজন সাক্ষী উপস্থাপন করেছেন। তারা স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তারা সিআরবি ডাবল মার্ডারে সাবেক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরকে দেখেননি বলে জানান আদালতকে। এছাড়া ওই ঘটনা সম্পর্কেও তারা তেমন কিছু জানেন না। যার কারণে তাদের তেমন জেরা করা হয়নি।
সিআরবিতে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে শিশুসহ দুইজন নিহতের ঘটনায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরসহ ৬৩ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। সম্পূরক চার্জশিটে আসামি ৬৪ জন হলেও কারাগারে খুন হওয়া অমিত মুহুরীকে এ মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কোটি টাকার টেন্ডারের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিতে প্রাণ হারান যুবলীগকর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু মোহাম্মদ আরমান (৮)।
ঘটনার পর কোতোয়ালী থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদি হয়ে হয়ে বাবর-লিমনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০ থেকে ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ২০১৫ সালের নভেম্বরে ৬২ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আসামিপক্ষ নারাজি দিলে আদালত পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ আড়াই বছর পর পিবিআই নতুন করে দুজনকে যুক্ত করে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে মহানগর হাকিম আদালতে সম্পূরক চার্জশির্ট দাখিল করে।

তবে পিবিআই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, যুবলীগ নেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে কোনও সাক্ষ্য-প্রমাণ পায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এবং হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততারও কোনো ধরনের বস্তুনিষ্ঠ সাক্ষ্য-প্রমাণ পায়নি তদন্তকারী সংস্থাটি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ না পেলেও মামলার পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তার জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে তাদের অভিযুক্ত করায় আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে এর সঙ্গে মিল রেখেই সম্পূরক অভিযোগপত্রে আসামির কলামে ওই ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে মামলার চার্জ গঠন বা আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরুর সময় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আদালতের কাছে সুপারিশও করা হয়েছে।

সম্পূরক অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার সময় হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ঢাকার উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিবে নেওয়াজ এভিনিউর লুবানা জেনারেল হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সংশ্লিষ্ট ডাক্তারি কাগজপত্র পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর